সেদিন সে আমাকে হারিয়ে ফেলে নি, যেদিন সে অন্য কাউকে নিজের করে নিয়েছিলো 'সযত্নে'। সেদিন হারিয়ে ছিলো যে দিন সে সিদ্ধান্ত নেয় 'সে বিয়ে করবে'। তবে কিন্তু ছিলো সেখানে। সেই কিন্তু টাই আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করেছিল। আমি ভাগ্যের মাথায় দোষ চাপিয়ে বাঁচতে চাই না। হতেও তো পারে ভাগ্যে লেখা ছিলো সে যদি 'কিন্তু' ছেড়ে কথা বলে তবে তাদের এক করে দেয়া হবে। সে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলো না। আমাকে চায় নাকি অন্য কাউকে তা সে জানত না। আমি অথবা অন্য কেউ, কে হবে তার সাথী তা সে ঠিক করে জানত না। সে আমাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয় নি সেদিন। সেদিন সে কাকে বিয়ে করবে তা নিয়ে চুল ছেড়া বিশ্লেষণে আর জটিল সব চিন্তা ভাবনায় বিভোর ছিলো। সে এতোটাই বিভোর ছিলো তার হাতটা কখন ছেড়ে দিয়েছি সে জানতে পর্যন্ত পারে নি। সেদিন তার হাজার অপশনের মাঝে আমিও একজন প্রতিযোগি ছিলাম মাত্র। সেদিন ঠিক সেদিন আমাকে হারিয়ে ফেলে ছিলো। আমি প্রতিযোগিতা চাই নি, আমি কোন অপশন ছিলাম না। আমি মূল্যবান না হয়ে অন্তত তার জীবনে প্রবেশ করতে চাইনি। যদি অমূল্য হয়ে তার জীবনে আমার ঠাই না হয়, তবে এতো প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে তার হওয়ার কি মানে? সে বলছে আমি না কি নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মেরেছি । অথচ আমি যখন তার পায়ের দিকে তাকালাম কি দেখলাম জানো? তার পা তার সাথেই ছিলো না। সে শুধু নিজের পায়ে কুড়াল মেরেই শান্ত হয় নি। পা দুটোই হারিয়ে ফেলেছে। তার ভালো থাকা অথবা না থাকায় কিছুই যায় আসে না এখন। তার কি মন খারাপ হয়? তার কি কান্না পায়? কষ্ট হয়? ঘুম হয় আমাকে ছাড়া? এসব কোন বিষয়ে এখন আর চিন্তিত নই। আমি তারাহুরো করিনি, আমি ভুলেও যাইনি। আমি ধরেই নিয়েছি সে ভালো আছে। আমি জানি সে সুখী। আমি জানি তার ঘুম ভালো হয়। কাজ ভালো হয়। পাশের মানুষের সহায়তায় সে ভুলতে বসেছে আমায়। তার জীবন আলোমাখা, আমার মতো এলোমেলো নয়। আমার জীবন এর থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত। অন্য কাউকে পাশে নেয়ার আগে আমাকে সে জানায় নি। তাই কেউ যদি এসে বলেও সে ভালো নেই আমাকে ছাড়া। আমি বিশ্বাস করব না তা। আমি আমার নিদ্রাহীন জীবন সহ্য করতে পারি। আমি আমার ডিপ্রেশনে জীবনেকেও মেনে নিতে পারি। আমি কঠিন কষ্টে দিন কাটাতে পারি হাসি মুখে। আমি আর তুমি এক না। আমাদের চিন্তা ভাবনা এক না। আমাদের সিদ্ধান্ত এক না। আমাদের ইগো এক না। আমরা কেউ কারো না। সে পা ছাড়াও ভালো আছে। আমি কুড়াল মেরেই ভালো নেই। তবুও এই কষ্ট আমার ব্যাক্তিগত। তবুও আমার ঘুমহীন রাত বিষন্নতা নিয়ে এলেও। অপ্রিয় কোন মুখ দেখে দিন শুরু করতে হয় না আমাকে। অপ্রিয় মানুষকে প্রিয় বানানোর চেষ্টা করতে হচ্ছে না আমাকে। আমার হাতে সময় আছে নিজেকে দেয়ার মতো। সময় হয়তো আমার ক্ষত মুছে দিবে একটু একটু করে। হয়তো ক্ষত নিয়েই বাঁচতে হবে। তবুও আসছে দিন খুব অপ্রিয় হবে বলে মনে হয় না। কারণ আমি এখনই অনেক টা প্রস্তুত। কারণ এখন আমি অনেকটাই বুঝতে শিখেছি। কারণ আমি নিজেকে যথেষ্ট সময় দিয়েছি নতুন করে গড়তে। আমি তারাহুরো করে কাউকে জীবনে স্থান দেয়ার আগে নিজের যত্ন নিতে শিখেছি। নিজেকে ভালবাসতে শিখেছি। নিজের জন্য বাঁচতে শিখেছি। এর থেকে বড় আর্শীবাদ আর কি হতে পারে আকাশ তুমিই না হয় বলো? -সুগার টি