গল্পে থাকা মানা

এক গল্পে আমি প্রায় নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলাম।
ভুলে গিয়েছিলাম নিজেরো একটি গল্প গড়তে হবে।
এক গল্প যা শুরু হয়েছিলো কোন এক ভুল প্রহরে, ভুল সময়ে, ভুল মানুষদের সাথে।
দ্রুত বয়ে চলা সময় থামিয়ে দিয়ে, সময়ের ভাগ দিয়েছিলাম যাকে তাকে।
অত্যন্ত অপ্রয়োজনীয় মানুষ তারা, তবুও তারা রয়েছে স্মৃতির সিংহভাগ জুড়ে।
সকল কৃতজ্ঞতা আমার অজ্ঞতা, অপরিপক্বতা, পরিপাটি মানুষ চেনার ভুলের।
হাজার হাজার প্রবাদ বানী, খনার বচন, গুরুজনদের জ্ঞান সম্পুর্ণ জলাঞ্জলী দিয়ে হলেও আমি তাদের সাথে কিছু অপ্রয়োজনীয় স্মৃতি গড়ে ছিলাম।
যে বয়সে প্রয়োজন ছিলো নিজের গল্পে থাকা,
কিন্তু থেকে ছিলাম অন্যদের গল্পে।
পুকুর পারে বসে বসে আড্ডা দেওয়া,
ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ানোর,
অতি বর্ষার কারণে জমে যাওয়া জলে তাদের সাথে হেটে কি উপভোগ করেছিলাম, তা আমি মনে করতে পারছিনা৷
তবে যা মনে করতে পারছি তা হলো অযথা সময় নষ্ট করা।
আমি মনে করতে পারছি আমি একটা seesaw খেলায় মেতে ছিলাম নিজেকে নিয়ে।
এখনো খেলি মাঝে মাঝেই।
আমার মাঝে এখন হাজারো ফোবিয়ার বসবাস।
গ্যামোফোবিয়া,সোস্যাল ফোবিয়া, ইলনেস ফোবিয়া ইত্যাদি ইত্যাদি।

সর্বপ্রথম ফোবিয়ার কথা তুলে ধরেছিলেন হিপোক্রেটিস তাঁর ‘The Seventh Book of Epidemics’-এ নামক বইয়ে।
খ্রীষ্টেরো জন্মের পূর্বে লিখেছিলেন ভয় নিয়ে।
সময়টা তখন খ্রীস্টপূর্ব ৪৭০-৪১০ হবে।
এই সময় কালের মধ্যেই তিনি ভয় নামক আভিজাত্যপূর্ণ সমস্যা নিয়ে বই লিখে ফেলেছিলেন।
তার মানে বুঝতেই পারচ্ছেন আমি খুব পুরোনো সমস্যার নতুন রুগী।
তিনি বলেছিলেন নিকানোর নামের এক ব্যক্তির কথা।
তার নাকি এক অজানা কারণে রাতের বেলার বাঁশির শব্দ ভয় জোগাতো অযথা।
সকাল বেলা একদম স্বাভাবিক ঠিকঠাক থাকা মানুষটা।
কিন্তু রাত হলেই বদলে যেতো অযথা।
বাঁশীই ছিলো তার জীবনের অযথা ভয়ের জন্মদাতা।
এক অজানা ভয়ে কুকরে যেতো বেচারা।
ভয়ের অনুভূতি আমি বুঝি, ভয়ের উৎপত্তি না জানলেও আমি ভয় কে বুঝি।
রাত্রি হলে আমাকেও অনেক অনেক ভয় চক্রাকারে আঁকড়ে ধরে।
যে সমস্যা ছিলো না, তা অপ্রয়োজনীয় স্মৃতি ও অপ্রয়োজনীয় মানুষ যেচে এসে দিয়ে গিয়েছে৷
সামাজিক থেকে অসামাজিক, প্রিয় থেকে অপ্রিয়, এমনকি স্বপ্ন পর্যন্ত পরিবর্তন করতে হয়েছে৷
তবে এতো সব অপ্রিয় ঘটনার মাঝে সুখবোধ হলো,
আমি আবার আমার প্রেমে পড়েছি, ভালবেসেছি, কাছে এসেছি।
সকল অপ্রপ্তির মাঝে যেন বড় ধরনের সফলতার পেয়েছি।
আমি বুঝতে শিখেছি, আমি তোমাকে পেয়েছি।

-সুগার টি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *