এইতো সেদিন পুরনো পরিচিত মানুষ আমাকে দেখে অবাক হলো।
প্রথম প্রশ্ন কেমন আছি?
কেমন যাচ্ছে দিন?
আমি হাসিমাখা মুখে জড়িয়ে ধরে বললাম ভালো আছি।
যাচ্ছে ভালো দিন।
আমার হাত ধরে বললো সব ঠিক আছে? এতো অপরিচিত কেন লাগে? এতো শান্ত কেন তুমি? উচ্ছাস কোথায় গেলো?
আমি হাতটা শক্ত করে ধরে বললাম আমি ভালো আছি,সময়ের দাবির মুখে পরিবর্তন হয়েছি।
তবে আমি ভালো আছি।
সে তার জীবনের গল্প তিন ঘন্টায় শেষ করে বললো,
এসব হয়েছে আমার সাথে, তাই হারিয়ে ফেলেছি মন।
আমি তাকে বাধা দেই নি, মুখে ক্লান্তি হতাশা লেস মাত্র ছিলো না।
অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে তার কথা শুনে বললাম,
হয় তো জীবনের কিছু অংশ খারাপ হয়েছে,
হয়তো অনেক কষ্ট তোমায় ছুয়ে দিয়েছে।
হয়তো আমি তোমার কোন উপকার করতে পারব না।
কিন্তু যখন খারাপ লাগবে, ভালো লাগবে, কাউকে লাগবে আমাকে পাবে।
কল দিও কথা হবে।
আরো কিছু বলবে? থাকব আর কিছুক্ষণ?
সে বলে দিলো না আর কিছুই বলার নেই, এতো কথা এতো দিন কেউ শুনেনি।
তুমি এতোক্ষণ এতো সুন্দর করে কেন শুনলে?
মনে মনে নিজেকে প্রশ্ন করলাম কেন শুনলাম?
কারণ আমি আগের থেকে নরম হয়েছি,
রাগ হারিয়েছি,
বিনয়ী হয়েছি, সহনশীলতা ও সম্প্রীতি বেড়েছে।
সময়ের সাথে সাথে মানুষের উগ্রতা নিয়ন্ত্রণে আসে।
ছটফটানি বন্ধ হয়ে যায়।
মানুষ বয়সের সাথে সাথে কিছুই শেখে না।
শেখে কষ্টের সাথে সাথে।
না পাওয়ার সাথে সাথে।
হারানোর সাথে সাথে।
হয়তো চাইলেই অনেক শত্রু রাখা যেতো মনে, অনেকের জন্য অভিশাপ বরাদ্দ করা যেতো,
কিন্তু…
কিন্তু কারোর সাথে আমার কোন শত্রুতা নেই।
কোন অভিযোগ নেই।
কষ্ট আছে, কিছু মন ভেঙে দেয়া ঘটনা আছে।
কিন্তু কেউ আমার অভিশাপে নেই।
আমার সাথে খারাপ করেছে বলে তার খারাপ করব এমন মন আমার নেই।
আমি যেতে দিতে জানি, ধরে রাখতে জানি।
আমি এখন আগের থেকে অনেক বড় হয়েছি।
মানুষের মতো মনকে হারাতে দেই নি, কষ্ট পেয়ে কঠিন হয়ে যাই নি।
ভালো খারাপের হিসেব ভুলে যাই নি।
নিজেই এখন ছায়া দিতে জানি।
যে কেউ সেই ছায়া আশ্রয় নিয়ে শীতল হতে পারে।
আমি এখন শীতলতার ছায়া দিতে জানি।
-সুগার টি