মায়া

কফির গল্প বলি,
আমার কফি পছন্দ। আমি অলস প্রকৃতির মানুষ। আমার মনে হয় চা বানানো সময়ের অপচয়, শক্তির অপচয়। কিন্তু কফির দাম আগের তুলনায় অনেক। গত বছর থেকে কফি কিনি নি এই বলে কফি চিনি ছাড়া ভালো লাগে না। অনেক তেতো। চা ভালো দারচিনি দিয়ে সামান্য মিষ্টি করে খাওয়া সম্ভব।

কিন্তু বেশ কিছু দিন আগে আম্মুকে বললাম ছোট প্যাকেটের কিছু কফি এনে দিবা? সকালে ঘুম থেকে উঠলে ঘুম কাটে না। আম্মা এনে দিলো। আমি খুব খুব খুশী ছিলাম। ৫ টাকার মিনি প্যাক ৬ টি। খুব ক্লান্ত বা খারাপ না লাগলে প্যাকেট গুলোর ব্যবহার হতো না। কিন্তু শেষ হয়ে গেলো খুব দ্রুত। আমি চা খাচ্ছি না, কফিও খাচ্ছি না। এক দিন খুব খারাপ লাগছিল চা বানাতে গেলাম। আম্মু বুঝতে পারলেন কফি শেষ। কিন্তু আমি তাঁর কাছে তা চাচ্ছি না।

তারপর দিন একটা ছোট কফি কাচের বোতল এনে আমার হাতে দিলেন। খুব কিউট দেখতে সাথে অনেক মায়ার। আমি কফির বোতল হাতে নিয়ে অনেক কান্না করে ছিলাম একা একা। কষ্টে না। এতো বছর বুঝতে না অনেক বিষয় বুঝতে পেরে। আমি ১২০০ টাকার কফিও খেয়েছি, যা শেষ হয়েছিল মাত্র ২৫ দিনে। কিন্তু সেদিনের ছোট্ট সে বোতলে ছিলো অনেক উপলব্ধি। আম্মা আমার নিরবতা বুঝতে পেরেছিলেন। আমি আম্মার নিরবতা। মাঝে মাঝে পায়ের নিচের মাটি নরম হওয়া প্রয়োজন। তাহলে ছোট ছোট যত্ন গুলো চোখে পড়ে। যখন সব ছিলো তখন অনেক অনেক যত্নের পড়েও মনে হতো কি করেছে? এগুলোতো সবাই সবার জন্য করে। কিন্তু সত্য হলো, করা বা না করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না। যা কিছু করছে সব কিছু যত্ন আর ভালবাসার প্রকাশ ছিলো এবং আছে। যা ছোট করে দেখা অন্যায়। অত্যন্ত অন্যায়। আমি অন্যায় করেছি। অনেক অন্যায় করেছি। নিজেকে ক্ষমা করা কঠিন। অত্যন্ত কঠিন আব্বা।

-সুগার টি

2 thoughts on “মায়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *